রোজা ভাঙার কারণ কী কী?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ
জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান
‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন
আজাদের উপস্থাপনায় বেসরকারি একটি
টেলিভিশনের জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে
দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট
আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
প্রশ্ন : কী কী কারণে রোজা ভঙ্গ হয়?
উত্তর : রোজা ভঙ্গের অনেক কারণ
রয়েছে। রোজা নিয়ে যেসব বই রয়েছে
বা সিয়ামের আহকাম-সংশ্লিষ্ট যে বইগুলো
রয়েছে, সেগুলো থেকে জেনে
নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তারপরও রোজা
ভঙ্গের মৌলিক বিষয়গুলো আমরা বলতে পারি।
সিয়াম ভঙ্গের জন্য প্রথমত যে বিষয়টি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো—স্ত্রী সহবাস অথবা
স্বেচ্ছায় যেকোনো ধরনের যৌনকাজে
সম্পৃক্ত হওয়া। এটি সিয়াম নষ্ট করে দেয়। তাই
কেউ যদি স্বেচ্ছায় কোনো যৌন চাহিদা পূরণ
করার জন্য চেষ্টা করেন, সেটা স্ত্রী সহবাস
অথবা যেকোনোভাবে হোক না কেন,
তাহলে তার সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে পানাহার করা। স্বেচ্ছায় যদি
কোনো ব্যক্তি পানাহার করেন, তাহলে তার
সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে।
তৃতীয় বিষয়টি একটু দীর্ঘ আলোচ্য বিষয়।
সেটা হচ্ছে পানাহারের অর্থ যেখানে পাওয়া
যায়, অর্থাৎ যে কাজের মধ্যে পানাহারের অর্থ
পাওয়া যায়, সে কাজগুলোও সিয়ামকে নষ্ট
করে। যেমন আপনি যদি ধূমপান করেন, তাহলে
আপনার সিয়াম নষ্ট হবে। অথবা আপনি কিছু গিলে
ফেললেন, যেমন—পাথর বা এই জাতীয় কিছু
আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে সিয়াম
নষ্ট হবে। তবে যদি থুতু গিলে থাকেন,
তাহলে সিয়াম নষ্ট হবে না, কারণ থুতু পানাহারের
মতো বিষয় নয়। এটা শরীরের অভ্যন্তরীণ
একটা বিষয়।
আর পানাহারের অর্থ নেই যে বিষয়গুলোতে
সেগুলো সিয়াম নষ্ট করে না, যেমন—
চোখে ড্রপ দিলে, কানে ড্রপ দিলে,
ইনসুলিন নিলে, ইনজেকশন নিলে সিয়াম নষ্ট
হবে না। কিন্তু পানাহারের অর্থ পাওয়া যায় এমন
ইনজেকশন বা স্যালাইন নিলে, যেগুলো
খাদ্যের কাজ করে, শক্তিবর্ধক অথবা খাদ্যের
ব্যবস্থা আছে, সেই স্যালাইন যদি কেউ নিয়ে
থাকেন, তাহলে তার সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে।
তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম, সিয়াম ভঙ্গের
মৌলিক বিষয় হচ্ছে তিনটি। প্রথমত, স্ত্রী
সহবাসসহ যেকোনো ধরনের যৌনাচার।
দ্বিতীয়ত, পানাহার বা খাদ্য গ্রহণ করা। তৃতীয়ত,
পানাহারের অর্থ যেগুলোর মধ্যে রয়েছে,
সেগুলো সিয়াম নষ্ট করে থাকে।
|