আমাদের সাইটের সকল কার্যক্রম এখন Arbd.pw সাইটে
Welcome To Abc24.GA
.Dec 8, 2017

বউ এর চাওয়া

আমি লাবণী।
বিয়ে হলো ৪ মাস। বর মানুষটা খারাপ না, কোনো অভাব দেয় নি এখনো। শশুড়-শাশুড়ী-ননদ বেশ ভালো। সংসারে আমার কিছুর অভাব নেই।
তবুও কিসের জানি বড্ড অভাব।

সারাদিন বাসার সব কাজ করে, খুব ক্লান্ত থাকি। শশুড় শাশুড়ি ননদ খেয়ে দেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পরে।

তারপর সময় বুঝে সবার চোখের আড়ালে একটু হাত মুখ ধুয়ে মুখে ক্রিম মেখে কপালে ছোট কালো একটা টিপ দেই, চোখে গাঢ় করে কাজল টানি,ঘন কালো চুলগুলো বেশ করে খোঁপা করি, ভালো কাপড় পরে তার অপেক্ষা করি।।

আমার বর সারাদিন অফিস করে ফিরতে ফিরতে রাত ১০-১১ টা বাজে। এলে তাকে খেতে দেই। প্রথম দু দিন না খেয়েই অপেক্ষা করতাম। ভাবতাম সে তো জানতে চাইবেই আমি খেয়েছি কিনা।কিন্তু সে জানতে চায় নি। হয়তো ভাবতো সবার সাথে খেয়ে নিয়েছি।

সে দু রাত খুব কষ্টে পার করেছিলাম। আসলে রাতে না খেয়ে থাকার অভ্যাস তো ছিলো না। আম্মু জোর করে হলেও খাইয়ে দিতো।।
এরপর দিন নিজেই তার সাথে খেতে বসেছিলাম।

_কি ব্যাপার খাও নি এখনো?
_নাহ!
_কেন?
_এমনি।

এরপর সে আর কিছু বলে নি।।। কতটা খেলাম, কি খেলাম কিছুই সে দেখে নি।।। এরপর থেকে এখনো তার সাথে বসেই খাই, কিন্তু তার খেয়াল আজও পাই নি!!
আর তার জন্য করা সাজগোজ সে কখনো খেয়ালই করে নি বোধ হয়। একদিন খাওয়ার সময় ননদ দেখে গেলো আমাদের। ওয়াশরুমে যেতে উঠেছিলো ননদ। যাওয়ার সময় কানে কানে বলে গেলো,
_ভাবি দারুন লাগছে তোমাকে।
সেদিন ভেবেছিলাম, হয়তো আজ বরের নজরেও ঠিক পরবো।

কিন্তু__
সে রাতে ঠিকই ঘরে এলো, কিন্তু কপালের টিপ, চোখের কাজল কিছুই দেখলো না। বলল না _লাবনী তোমাকে বেশ মায়াবী লাগছে, খুব সুন্দর লাগছে গো তোমায়। তোমার চোখে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করছে। (অথচ এই সৌন্দর্য নিয়ে কত জনের চোখে পরেছি হিসাব নেই)

সে আমার হাতটা ধরলো। কিন্তু বলল না
_তোমার হাতটা খুব নরম সোনা।
হাতে চুমুও দিলো না। (বান্ধবী রা সবসময়ই আমার এই হাতের প্রশংসা করতো)

সে আমার গালে হাত দিলো। কিন্তু বলল না _আমার বউএর গালটা খুব তুলতুলে।
গালে গালটাও ঘসলো না একবার। (এই গালে ছোট বোনের যে কত নজর ছিলো)

সে আমার গলায় চুমু খেলো, কিন্তু আমার খোঁপাবন্দি চুলগুলো মুক্তি পেলো না। সে চুলের গন্ধ নিলো না, চুলে মুখ ডুবিয়ে বলল না
_লাবনী তোমার এলো চুলে ভেসে যাবো আজ। (ভাবতাম হয়তো কোনোদিন একটা গোলাপ এনে খোঁপায় গুঁজে দিবে)

সে আমার ঠোঁটে ঠোট ডুবালো, কিন্তু হাত দিয়ে ছুঁয়ে একবারো বলল না,
_তোমার ঠোটগুলো গোলাপের পাপড়ির মতো সুন্দর, আর খুব মিষ্টি ।

সে যখন তার শরিরের তৃপ্তিতে হাসছে, আমি তখন তার হাসি মুখ দেখে হাসছি। সে কখনো বলে নি _লাবনী তুমি সুখী তো? তৃপ্ত তো? (তার উত্তেজিত নিশ্বাসের ভীরে আমার এক টুকরো দীর্ঘশ্বাস যেন কোথায় হারিয়ে যেতো)

সে কখনো বলে নি
_ এই লাবনী তোমার হাসি টা খুব মিষ্টি। চিনি মিশিয়েছো নাকি হাসিতে???

সকালে দ্রুত উঠে গোসল সেরে, সবার খাবার আর তার টিফিন তৈরী করে ঘরে চলে যাই তার খাবার নিয়ে। সকালেও সে বলে না, এই খেয়েছো তুমি? কখনো একটু রুটি ভাজি মুখে তুলে বলে না
_আজ না হয় আমার হাতেই খাও।

বেরোবার সময় কপালে চুমু দিয়ে বলে না
_তোমার কিছু লাগবে লাবনী।

আমি জানি সে খুব ব্যস্ত। সারাদিন খাটে সংসারের জন্য রোজগার করতে। তবুও তো আমাকে তো ছুটির দিন টুকুও দিতে পারে। বলতে পারে
_লাবনী চলো তোমাদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসিসি। নিশ্চয় তোমার বাবা-মা কে দেখতে ইচ্ছা করে।

বলেনা সে।। বলেনা।। বলেনা।। বলেনা।।

তবুও এক বুক আক্ষেপ আর এক চিলতে আশা নিয়ে প্রতীক্ষায় আছি, কোনো একদিন সে বুঝবে আমায়।। বুঝবেই।।।